Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

দেহরক্ষী


বাংলা উপন্যাস


All Bengali Stories    22    23    24    25    26    27    (28)       

-হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর - ১৩, আগরতলা, ত্রিপুরা ( পশ্চিম )

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------

দেহরক্ষী
( বাংলা উপন্যাস )
- হরপ্রসাদ সরকার, আগরতলা, ত্রিপুরা



Previous Parts: 1st Part    2nd Part    3rd Part    4th Part   


◕ ৫ম পর্ব

অরণ্যের সেই জনপদটির পরিবেশ এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। সকল উত্তেজনা প্রশমিত হয়েছে। রাতে শয়ন কালে রাজা মনে মনে ভাবছেন, রাজগুরু এমন উপর-চাল মানুষ, ভাবতেই পারিনি। কেন তিনি এমন করলেন? তাই বুঝি সেদিন তিনি রাজ্যের সুরক্ষা সম্পর্কে এত কিছু জানতে চেয়েছিলেন আমার কাছে? বিভিন্ন দুর্গ, বিভিন্ন অস্ত্রাগার, খাদ্য ভাণ্ডার ইত্যাদি সম্পর্কে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন! আমিও নির্বোধের মত সব কিছু এক এক করে বলে দিলাম। হা ঈশ্বর! ভাগ্য ভাল - এই গুপ্ত স্থানটির কথা বলার আগেই সেনাপতি সভাগৃহে চলে এসেছিল আর সেই প্রসঙ্গ বন্ধ হয়ে যায়। তা না হলে কী যে হতো? হা ভগবান!

এদিকে রাজধানীতে চলছিল অন্য একটি ঘটনা। সেদিন কাক-ভোরে কাপট্যকানাতের কুঠির থেকে বের হয়ে পদ্মবীণা নির্ভীক ভাবে তার প্রাসাদে ফিরে যেতে লাগল। সে জানে, হয়তো প্রাসাদে গিয়েই সে সোজা এক অগ্নিকুণ্ডে পড়বে, শত্রুর হাতে মৃত্যুও হতে পারে তার। তবু সে আজ নির্ভীক। দেশমাতার জন্য যদি প্রাণ যায় - যাবে। এ তো পরম সৌভাগ্য। তবে সহজে সে হার মানবে না। যদি আঘাত আসে তাহলে সেও শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত প্রত্যাঘাত করে যাবে। আবার পরিস্থিতি বুঝে আত্মরক্ষার এবং পলায়নের সকল পথও মনে মনে ঠিক করে রাখল। মনে তার হাজার প্রশ্ন। কে এমন গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি পাঠাল? কেন পাঠাল? ও কী তাহলে পদ্মবীণাকে চিনে ফেলেছে? সমাচারটি কী সত্যি না কী একটি চাল? ইত্যাদি ইত্যাদি। এই প্রশ্ন গুলির সমাধান শুধু নিজের কক্ষে গেলেই পাওয়া যাবে। দ্রুত পথ চলতে লাগল পদ্মবীণা।

পায়ে পায়ে প্রাসাদের সামনে এসে দাঁড়াল সে। পূব আকাশে তখন বালাদিত্য সবে চোখ মেলেছে। পদ্মবীণা নিজের তলোয়ার আর ছুরিগুলিকে একবার হাত দিয়ে দেখল - তারপর বুক ভরে একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে হুর-হুর করে প্রাসাদের ভীতরে ডুকে গেল - একেবারে সোজা নিজের ঘরে, নিজের বাসকে, যেখানে তার মেঘমালা থাকে। কিন্তু না - প্রসাদের সব কিছুই তো তার কাছে স্বাভাবিকই মনে হল। কেউ তাকে বন্দীও করতেও এলো না কিংবা নিজের বাসকে আসতে বাঁধাও দিল না। খুব অবাক হল পদ্মবীণা। নিজের কক্ষের সামনে এসে সে আরও বেশী অবাক হল, কিছুটা অস্বাভাবিকও ঠেকল তার কাছে। এ কী কাণ্ড? তার বাসকের এক ধারে একটি আসনে রত্নমালিকা বসে আছে। এত ভোরে নিজের কক্ষে রত্নমালিকাকে দেখে থমকে দাঁড়াল পদ্মবীণা। কারণ রত্নমালিকা অহরহ তার কক্ষে এলেও সচরাচর অসময়ে, কিংবা এত ভোরে কখনোই আসে নি।

গণিত মিলাতে পদ্মবীণা-র খুব একটা সময় লাগল না। সে বুঝে গেল কে তাকে সেই বার্তাটি পাঠিয়েছিল! কিন্তু কেন? কী কারণে রত্নমালিকা এ কাজ করল? রত্নমালিকাকে এই সমাচারটি কে দিল? এটা কী রত্নমালিকার কোন এক চাল? সে কী পদ্মবীণা সম্পর্কে সব কিছুই জেনে গেছে? কিন্তু কিভাবে? এত এত প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে পদ্মবীণা কিছুক্ষণ নীরব থেকে পরিস্থিতিটিকে পড়তে চাইল - আরও গণিত মিলাতে চাইলো। সুতীক্ষ্ণ সতর্ক দৃষ্টিতে সে রত্নমালিকার দিকে তাকিয়ে রইল। কিন্তু না, আর কোনও কিছুই যে মিলছে না - কোনও হিসাবই মিলছে না। সে সেখানেই দাঁড়িয়ে রত্নমালিকাকে দেখতে লাগল।

রত্নমালিকা যেন আজ এই ভোরে নিজের রূপকে আরও বাড়িয়ে নিয়েছে। তার রূপের আলোতে ঘরটি ঝলমল করছে। স্বর্ণ অলংকারে, উপস্করে অপরূপ সজ্জিত হয়ে সে মাথা নিচু করে বসে আছে। চোখ তার খুশিতে জ্বলজ্বল করছে কিন্তু অশ্রুসিক্ত। মুখমণ্ডল তার কঠোর, গুমসা কিন্তু তাতে একটা তৃপ্তি ভাব। পরাজিতের মত মাথা নুইয়ে আছে, কিন্তু দেহ ভঙ্গিমায় বিজয়ীর ছাপ। কী যেন ভাবতে ভাবতে সে অন্যমনস্ক হয়ে মাটিতে পড়ে থাকা একটি ফুলের কলির দিকে তাকিয়ে আছে আর পায়ের গুরবাঁক এক আঙুলে নাড়ছে। কলিটি নিশ্চয় তার খোঁপা থেকেই মেঝেতে পড়ে থাকবে। একটি বাসি ফুলের মত উদাস বাসে থাকলেও, রত্নমালিকাকে ভোরের তাজা শিউলি ফুলের মত মনে হচ্ছে। তার শরীর থেকে স্নিগ্ধ কুঁদফুলের গন্ধ এখনো ভেসে ভেসে আসছে। তার আলুলিত কেশরাশির ফাঁকে ফাঁকে উজ্জ্বল স্বর্ণাভ গাল যেমন মেঘের ফাঁকে ফাঁকে সোনার চাঁদের টুকরো। তবে তার ঐ অনাবৃত যৌবন-প্রস্ফুটিত স্বর্ণাভ কোমল নাভিকুণ্ড থেকে অল্প কিছু রক্ত কেন ভেসে আসছে? কিছু একটা ঘটনা নিশ্চয়ই ঘটেছে। পদ্মবীণা ধীরে ধীরে রত্নমালিকার কাছে এগিয়ে এল। ধীর কণ্ঠে ডাকল - রত্নমালিকা! রত্নমালিকা!

পদ্মবীণা-র ডাক শুনে চমক ভাঙ্গল রত্নমালিকার। সে ধীরে ধীরে পাথর চোখে ফিরে তাকাল পদ্মবীণা-র দিকে। কিছুক্ষণ তেমনি তাকিয়ে রইল পদ্মবীণা-র চোখে চোখে - যেন চিনেও চিনতে পারছে না। ভাব-লেস হীন সে চোখ যেন প্রাণ ভরে দেখে নিতে চায় পদ্মবীণাকে।

শান্ত, আদর স্বরে পদ্মবীণা বলল - কী হয়েছে রত্নমালিকা? কী হয়েছে তোমার? তুমি এত চুপ কেন? আর এ কী বেশ তোমার?

বলা নেই - কথা নেই, রত্নমালিকার সেই পাথর চোখ থেকে হঠাৎ ধর-ধর করে জল পড়তে লাগল। যেন বুকের তুফান আজ তার চোখে ঝড় তুলেছে। সে কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ল পদ্মবীণা-র পায়ে । কাতর কণ্ঠে বলতে লাগল - আমি আর নিশিগন্ধা হয়ে বাঁচতে চাইনা, এক মুহূর্তও আমি আর নিশিগন্ধা হয়ে বাঁচতে চাইনা। আমি আর এই জীবনের ভার সহ্য করতে পারছি না। তুমি আমাকে তোমার চরণে স্থান দাও - আমাকে গ্রহণ করো। কেন তোমার এই অবহেলা, কেন এত উপরতি?

পদ্মবীণা এই ঘটনার জন্য বিন্দুমাত্রও প্রস্তুত ছিল না। সে কী খপুষ্প ভাবতে ভাবতে এখানে এসেছিল আর এখানে কী পেল! এই অকল্পিত গুরুগিরি পরিবেশে সে ভ্যাবা-গঙ্গারাম হয়ে রইল। কী করবে কিছুই ভেবে পেল না। তবে সে তার মস্তিষ্ককে অতি শান্ত রাখল। এক নারীর চোখের জলে, আবেগে বয়ে গেল না। সে যে দেশমাতার একজন নিষ্ঠাবান সিপাহী - তার কাঁধে এখন গুরুভার, এই কথা সে বিন্দু মাত্র ভুলল না। সে রত্নমালিকাকে কিছু বলতে যাচ্ছিল - কিন্তু কিছু বলার আগেই দেখল রত্নমালিকা জ্ঞান হারিয়েছে। ঝকঝকে মেঝেতে রত্নমালিকার দেহ অজ্ঞান অবস্থায় লুটিয়ে পড়ল। পদ্মবীণা চীৎকার করে দাস-দাসীদের ডাকতে লাগল। দ্রুত দাস-দাসীরা ছুটে এলো। মেঝ থেকে তুলে পালং এ শোয়ানো হল রত্নমালিকাকে। মাথায় জল ঢালা হল। কিছুক্ষণ পরে জ্ঞান ফিরল তার। অবাক চোখে এদিক ওদিক তাকিয়ে পদ্মবীণাকে পাশে দেখে ক্ষীণ কণ্ঠে বলল - তুমি এসেছ! আমি তোমার আশাতেই বসেছিলাম। আর ভয় নেই। তুমি এসেছ যখন তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।

পদ্মবীণা রত্নমালিকার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল - বৈদ্যরাজকে ডেকে আনবো কী?

অতি ধীর কণ্ঠে রত্নমালিকা বলল - বদ্যি ডাকতে হবে না। আমি ঠিক আছি। একটু ঘুমোতে চাই।

পদ্মবীণা স্নেহের সুরে বলল - ঠিক আছে, তুমি এখানেই ঘুমাও। আমি তোমাকে বাতাস করছি। নিশ্চিন্তে ঘুমাও - আমি তোমার পাশেই আছি। কোন ভয় নেই - সব ঠিক হয়ে যাবে।

রত্নমালিকা মৃদু হেসে, পদ্মবীণা-র একটা হাত নিজের হাতে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। পদ্মবীণা জড়-থর হয়ে তেমনি বসে রইল আর আকাশ পাতাল ভাবতে লাগল কিন্তু কোন কিছুর কূলকিনারা পেল না। কী এমন ঘটে গেল এক রাতে! শুধু রত্নমালিকাই তা বলতে পারে! তাই সে রত্নমালিকার সজাগ হওয়ার প্রতীক্ষায় রইল।

সূর্য পশ্চিম দিগন্তে প্রায় অস্ত যাচ্ছে। সন্ধ্যার প্রদীপ একটা দুইটা ধীরে ধীরে জ্বলতে শুরু করল সেই অশান্ত নগরীতে। রত্নমালিকাও ধীরে ধীরে তার চোখ খুলল। চোখ ঘুরিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকে পদ্মবীণা-র ঘরে, পদ্মবীণা-র পালঙে দেখে বেশ অবাক হল। উঠার চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। শরীরে আজ তার সে ক্ষমতা নেই - খুব যন্ত্রণা। সেই যন্ত্রণাই তাকে গত রাতের কথা মনে করিয়ে দিল। ক্ষণিকের জন্য তার চোখগুলি আগুনের মতো জ্বলে উঠল। মিন মিন স্বরে সে দাসীকে ডাকল, বলল - পদ্মবীণা কোথায়?

- এই তো আমি এখানে। তুমি এখন কেমন আছো? পদ্মবীণা সামনে এসে দাঁড়াল।

পদ্মবীণাকে দেখতে পেয়ে চাঁদ মুখে একটু তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল। চোখে চোখ রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল রত্নমালিকা। তার চোখ দুটি যেন আজ অনুরাগে ভরা। যেন অনেক প্রেমের কথা বলতে চায় পদ্মবীণার সাথে।

- সারাদিন তো কিছু খাওয়া হয়নি, একটু কিছু খাবে?

মাথা নাড়ল রত্নমালিকা। বলল - তুমি যদি দাও।

এই কথা শুনে হা হা করে হেসে উঠল পদ্মবীণা - মুখে কিছুই উত্তর দিল না। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফল, দুধ, খদিকা আর ভুনি খিচুড়ি এসে গেল। পদ্মবীণা-র আদেশ অনুসারে দাস-দাসীরা তাদের একান্তে ছেড়ে সেই কক্ষ ছেড়ে বাইরে চলে গেল। পদ্মবীণা একটু হেসে বলল - কিছু কী বলবে?

রত্নমালিকার অধরে যেন সব পাওয়ার হাসি। সে রহস্যময়ী চোখে হেসে বলল - কী জানতে চাও?

পদ্ম - এই তো গত রাতের কথা? কেন তোমার এমন বেশ? কেন তুমি এত অসুস্থতার পরেও এত জীবন্ত?

রত্ন - শুধু কী এ কথাই জানতে চাও? আর কিছু জানতে চাও না?

পদ্ম - যদি তুমি বল তবে সব কথাই জানতে চাইবো?

রত্ন - কিন্তু আমি তোমাকে বলবো কেন?

পদ্ম - আমি যে তোমার বন্ধু!

রত্ন - বন্ধু! হেঁঃ! যাও! আমি তো তোমাকে বন্ধু ভাবি না!

পদ্ম - তবে কী ভাবো?

রত্ন - বলবো!

পদ্ম - বল!

রত্নমালিকা যেন এই কথার জন্যই এত দিন অপেক্ষা করে ছিল। আজ সুযোগ পেয়ে সে তা হারাতে চাইল না। সম্পূর্ণ সমর্পিত হয়ে হৃদয়ের গভীর থেকে বলল - তুমি যে আমার সব কিছু। আমার জীবন, আমার প্রাণ। আমার গৌরব, আমার ভালবাসা।

রত্নমালিকার এই কথা শুনে মনে মনে বেশ সতর্ক হয়ে গেল সেই গুপ্তচর। কারণ এই প্রেমের জালে ফাঁসিয়েই অনেক বড় বড় তথ্য বের করে নেয় শত্রুর গুপ্তচরেরা। এটা রাজনীতির এক বহু পুরানো চাল - গুপ্তচরদের এক প্রধান অস্ত্র। তবে পদ্মবীণাকে এই কূলে ভিড়তে তো হবে, তবে অতি সাবধানে। মনে মনে খুব সতর্ক হয়ে পড়লেও সেই কথা সে বুঝতে দিল না রত্নমালিকাকে। হেসে একটু উপহাস স্বরে বলল - ওহ্! তাই বুঝি! আমি তো ভাবতাম প্রতি রাতে যার -! আর এগোল না পদ্মবীণা। নিজের কথাটা অসমাপ্তই রাখলো। কখনো কখনো অসমাপ্ত কথাও সকল কিছুই বলে দেয়। এবার ও তেমনটাই হল।

রত্নমালিকার লতার মত সুন্দর ভ্রু-লতা কুঞ্চিত হয়ে উঠল। মুখের হাসি তার মিলিয়ে গেল - কী ভাবতে তুমি?

পদ্ম - নাহ্! কিছু না। বলছিলাম, ভালবাসা কী এত সোজা? এত সহজে সব কিছু বিশ্বাস করা যায়?

রত্ন - ও! তুমি কী আমার ভালবাসাকে বিশ্বাস করতে পারছ না? সন্দেহ হচ্ছে আমাকে? বল তোমার সন্দেহ নিবারণ করতে আমি কী করতে পারি!

পদ্মবীণা যেন এটাই চাইছিল। শত্রুর জালকে শত্রুর উপরই ছুড়ে দিল সে, বলল - অবিশ্বাস করছি না রত্নমালিকা! কিন্তু তবু ভরসা পাচ্ছি না!

রত্ন - আচ্ছা! তাই বুঝি! বল, তোমার ভালবাসা পেতে আমাকে কী করতে হবে! তুমি যা বলবে, আজ-এখুনি আমি তাই করবো। তবু আমি তোমাকে হারাতে চাই না।

পদ্মবীণা একটু হেলা স্বরে বলল - থাক! থাক! প্রেমের বাজারে ও রকম কথা তো অতি সাধারণ।

জ্বলে উঠল রত্নমালিকা - নাহ! আমার প্রেম সাধারণ নয়। তুমি বলেই দেখো না। কী চাও তুমি? আমার প্রাণ?

পদ্মবীণা এবার তার শেষ অস্ত্রটি চালাল। কঠোর সুরে বলল - তোমার প্রাণ নিয়ে আমি কী করবো! যদি দিতে হয় তবে তোমার কনীনিকা দুটি আমাকে দাও। ও চোখ দুটি আমাকে দিয়ে দাও। পারবে?

এই কথা শুনে রত্নমালিকা প্রথমে একটু থমকে গেল। তারপর দৃঢ় কণ্ঠে বলল - "অ তাই বুঝি? তুমি এত নিষ্ঠুর হতে পার! তবু ঠিক আছে - আমি আমার ভালবাসার কাছে ঋণী থাকতে চাই না। যদি আমার দুটি কনীনিকাই আমাকে আমার ভালবাসা ফিরিয়ে দিতে পারে তবে এই নাও আমি আমার দুটি কনীনিকাই তোমাকে দিয়ে দিলাম। তবু আমি তোমাকে হারাতে চাই না। " এই বলে সে পালঙ থেকে লাফ দিয়ে নেমে, তড়িৎ বেগে দূরে রাখা দুটি শানিত উন্মুক্ত ছুরি দুই হাতে নিয়ে, বিদ্যুৎ গতিতে নিজের দুটি চোখে আঘাত হানল।

গগন ভেদী চীৎকার করে উঠল পদ্মবীণা - নাহ্! ঝাঁপিয়ে পড়ে সে রত্নমালিকার দুই হাত চেপে ধরল। আর একটু হলেই সব শেষ হয়ে যেত - পদ্মপলাশের মত দুটি হরিণ চোখ চিরদিনের মত শেষ হয়ে যেত। রত্নমালিকার হাত ধরে থরথর করে কাঁপতে লাগল পদ্মবীণা - এ তুমি কী করতে যাচ্ছিলে রত্ন? অক্ষত রইল রত্নমালিকার ভ্রমরকৃষ্ণ হরিণ আঁখি দুটি। সেই আঁখি থেকে অথৈ প্রেমের অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগল। সে তন্ময় ভাবে পদ্মবীণা-র চোখে অপলক চেয়ে রইল, করুণ সুরে বলল - "আর কিছু বাকী রইল।" পদ্মবীণা ও তেমনি প্রেম বিভোর রত্নমালিকার হাত ধরে পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়ে তার চোখে চোখ রেখে চেয়ে রইল। সে কোন কথা বলতে পারছে না। তার অভিজ্ঞ চোখ রত্নমালিকার অন্তরের নিষ্পাপ, নিষ্কলঙ্ক, দিব্য প্রেমকে অনুভব করতে থাকল। এই রত্নমালিকা তো সেই রত্নমালিকা নয়! তার দেহ মন থেকে যেন প্রেমের এক পবিত্র জ্যোতি বের হচ্ছে। রত্নমালিকার ভালবাসা যে ছলনা আর মিথ্যা নয় - খাঁটি এবং পবিত্র, এই কথা বুঝতে আর বাকী রইল না পদ্মবীণার। ধীরে ধীরে রত্নমালিকাকে নিজের পালঙে, নিজের পাশে বসাল সে। অনুরাগসিক্ত স্বরে বলল - তুমি জিতে গেলে রত্নমালিকা। তুমিই জয়ী হলে।

রত্নমালিকা তেমনি তৃষিত প্রেম বিহ্বল চোখে চেয়ে রইল পদ্মবীণা-র চোখে। চোখ দিয়ে তার খুশির অশ্রু ঝরছে, ভালবাসার অশ্রু ঝরছে। শত জনমের অনুরাগ সে যেন আজ হাতে পেল। তন্ময় সুরে সে বলল - তুমিই আমার পৃথিবী। আমার পৃথিবীর সব কিছু তুমি। আমি যে শুধু তোমার হয়ে বাঁচতে চাই। আমাকে কী তুমি তোমার চরণে একটু স্থান দেবে?

আবেগের সুরে পদ্মবীণা বলল - আর তো কিছু দেওয়া-নেওয়ার বাকী রইল না রত্ন! তবে তুমি তো জান আমি কে! প্রাণ হাতে নিয়ে চলাফেরা করি। যে কোন মুহূর্তে মৃত্যু হতে পারে। মৃত্যুর সাথে আমি লুকো-চুরি খেলা করি। তারপরও কী তুমি আমার হয়ে বাঁচতে চাইবে?

অশ্রুসিক্ত নয়নে একটু হেসে রত্নমালিকা বলল - আমি যে তোমাকে ভালবেসেছি। মরণ - বাঁচনের চিন্তা এখন আমার কাছে বৃথা। আর ও চিন্তা আমি করতেও চাই না। যতদিন বাঁচব তোমার হয়েই বাঁচবো। তবে একটা কথা, তুমি তো তোমার কথা বলে দিলে - কিন্তু আমি তো আমার কথা বলিনি। আমারও তো অনেক কথা আছে। তুমি তো জানো না আমি কে! আমিও তো কখনো তোমাকে আমার পরিচয় বলিনি।

পদ্ম - আজও কী আমার কাছে তোমার পরিচয় দিতে কোনও বাঁধা আছে?

একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মাথা নেড়ে রত্নমালিকা বলল - না, আজ আর কোনও কিছুই আমি লোকাবো না। লুকাতে চাইও না। সব কিছুই তোমাকে খুলে বলবো। যে শত্রুরা বিশ্বাসঘাতকদের সাহায্য নিয়ে তোমাদের রাজ্য দখল করেছে সেই অকচ রাজার এক খুব সুন্দরী দাসী ছিল, গিরিমল্লিকা। রূপে, যৌবনে যেন স্বর্গের অপ্সরা। দুষ্ট রাজার ভোগ পিপাসা এত বেশী ছিল যে সে তার দাসীকেও ছাড়েনি। তার কু-নজর গিয়ে পড়ল সেই দাসীর উপর। দীর্ঘদিন গোপনে নিজের যৌন লালসা পূর্ণ করল সে। এই খরব রানী জানত না। ফলে সেই দাসীর ঘরে দুইটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বিপাশা আর ইন্দ্রাবতী। সেদিনের সেই ছোট্ট বিপাশা আজকের রত্নমালিকা। ইন্দ্রাবতী ছিল আমার খুব আদরের ছোট বোন। আমরা আমাদের মা-র মতই সোনার রূপ, যৌবন পেলাম। যখন সবে মাত্র আমাদের দুই বোনের বসন্তের ফুল ফুটতে শুরু করেছে তখন রানীর কানে রাজার এই অবৈধ যৌন সম্পর্কের কথা গেল। এক রাতেই আমাদের সকল রাশিচক্র ঘুরে গেল আর এর সাজা আমরা পেলাম। সেইদিন গভীর রাতে এক দল সৈন্য আমাদের ঘরে চড়াও হল। আমাদের প্রাণ বাঁচাতে মা আমাদের নিয়ে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়লেন নীচে। মা আর ওখান থেকে উঠতে পারলেন না। চিরদিনের জন্য ওখানেই শুয়ে গেলেন। আমরা দুই বোন তখন সেই আধারে মাকে ছেড়ে পাশের সুপারি বাগানে পালিয়ে গেলাম। সেখান থেকে পাহাড়ের ঢালু জায়গা দিয়ে সোজা নীচে নেমে গেলাম এক নদী উপত্যকায়। সৈন্যরাও আমাদের পিছন ধাওয়া করল। হঠাৎ একটা তীর এসে আমার পিঠে বিঁধল। আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম। আর কিছু মনে নেই আমার। যখন জ্ঞান ফিরল তখন দেখলাম আমি রাজ-নর্তকীর ঘরে। আমি আমার ছোট বোনের খুঁজ করলাম। ওরা বলল - সে তাদের হাতে বন্দী আছে। আমি যদি তাদের কথা না শুনি তবে তারা তার উপর চরম অত্যাচার করবে। ওরা বলেছে এই মনিপুর রাজ্য জয় করার পর তারা আমাকে আমার ছোট বোনের সাথে সাক্ষাত করিয়ে দেবে। তাই আমি তাদের সব আদেশ মেনে নিয়েছিলাম। দাসীর গর্ভেই হোক, ছিলাম তো রাজার মেয়ে। তাই কেউ আমার সম্মানে হাত দিতে সাহস করেনি। শেষে রাজার আদেশে তোমাদের দেশে এলাম আগুন লাগাতে। আগুন লাগলও। আমিই রূপের আগুনে রচনা করেছিলাম বিশ্বাসঘাতকদের জন্য ভোগতৃষ্ণার প্রথম ফাঁদ। আমিই তাদের বিবেকভ্রষ্ট করতে তাদের মধ্যে ভোগতৃষ্ণার লালসা ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমিই সেই মানুষ যে মন্দির থেকে ভগবানকে সরিয়ে শয়তানকে বসাবার প্রথম কাজটি করেছি।

অধীর আগ্রহে পদ্মবীণা সব কথা শুনে যাচ্ছে। সে বলল -ও বুঝলাম, কিন্তু কথা তো শেষ হল না! তারপর?

আবার একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রত্নমালিকা বলল - তারপর! তারপর এই আজ থেকে দু-দিন আগে আমার সব কিছুই উলট-পালট হয়ে গেল। সে খবর তুমি জানতে না - জানার কথাও নয়। সেদিন ভোরে আমি প্রাসাদের ছাদে পায়চারি করছিলাম। এমন সময় দেখলাম একটি যুবতী সামনের পথটি দিয়ে খুব দ্রুত দৌড়ে যাচ্ছে। মেয়েটি দৌড়ে সোজা আমার প্রাসাদে ডুকে গেল। আমি অবাক হলাম না- ভাবলাম হয়তো কোন দাসী হবে। কিন্তু না! একটু পরেই দেখলাম একদল সৈন্য সেই মেয়েটিকে খুঁজতে খুঁজতে সে পথ দিয়ে অন্য দিকে চলে যাচ্ছে। আমার একটু সন্দেহ হল। আমি দ্রুত প্রাসাদের ছাদ থেকে নীচে নেমে এলাম। দেখলাম বৈঠকখানা-র পর্দার আড়ালে মেয়েটি লুকিয়ে আছে। আমার ডাকে দাস-দাসীরা তাকে ঘিরে ফেলল। সে আর পালাতে পারল না। আমি প্রচণ্ড ধমকের সুরে বললাম - "কে তুমি ওখানে? এখুনি পর্দার আড়াল থেকে সামনে বেরিয়ে আসো! তা না হলে বাধ্য হয়েই আমাকে সিপাহীদের ডাকতে হবে।" মেয়েটি ধীরে ধীরে পর্দার আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো। তাকে দেখেই আমার হাত পা থরথর করে কেঁপে উঠল - এ যে আমার ছোট বোন ইন্দ্রাবতী। সেও আমাকে দেখে যেন আকাশ থেকে পড়ল। আমি কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলাম। সেও আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদল। পরে তার মুখে আমি যে কথা শুনলাম, তা শুনে রাগে, অপমানে, ঘৃণায় আমার শরীর জ্বলতে লাগল। আমার সকল ভ্রম ভঙ্গ হল। হিংসা আমার মনে সাপের ফণার মত মাথা তুলে দাঁড়াল। রক্ত বক্-বক্ করে ফুটতে লাগল। মনে হল এখুনি তলোয়ারের এক আঘাতে শেষ করে দেই সেই শয়তান অকচটাকে।

কথা বন্ধ করে একটু রহস্য হাসি হেসে রত্নমালিকা পদ্মবীণাকে বলল - তুমি জানতে চাইবে না কে সেই ইন্দ্রাবতী? তুমি তো তাকে খুব ভাল জানো? সে এখন আমার কাছেই আছে - আর সেইই আজ এত ভোরে তোমার কাছে সেই গুরুত্বপূর্ণ সমাচারটি পাঠিয়েছিল।

বিস্ময়ে বিস্ফোরিত নেত্রে পদ্মবীণা জানতে চাইল - কী? ইন্দ্রাবতী আমার কাছে সমাচারটি পাঠিয়েছিল? আমি তো ভেবেছিলাম তুমিই আমার কাছে সেই সমাচারটি পাঠিয়েছিলে!

একটু হেসে রত্নমালিকা বলল - না গো না। আমি শুধু রাজপ্রাসাদ থেকে সেই সমাচারটি এনে ইন্দ্রাবতীকে দিয়ে ছিলাম। বাকী কাজটা সেইই করল।

পদ্মবীণা একটু অশান্ত, একটু চিন্তিত হয়ে বলল - তবে কী তোমাদের রাজা, আমাদের রাজশ্রেষ্ঠকে ধরতে সেই জাল বিছিয়ে দিয়েছেন? ওরা কী ওদের চালে সফল হয়ে যাবে?

হা হা করে হেসে উঠল রত্নমালিকা। অত্যন্ত ঘৃণার স্বরে বলল - সেই শয়তান, সেই অকচ, সেই ককুদ অংসকূট কপটি, যে নারীর নেশায় সদা ভোম হয়ে থাকে - আমার রাজা নয়। এখন থেকে তুমিই আমার সব। তাই তোমার রাজাই আমার রাজা। আর আমি বেঁচে থাকতে আমার রাজাকে কখনোই শত্রুর হাতে তুলে দিতে পারি না। তাই রাজার পোষা কপোতটিকে ওদের আগে আমিই গোপনে খাঁচা খুলে ছেড়ে দিয়েছি। যাঃ! ওরা যেন আর ওর নাগালই না পায়। ওকে নিয়ে কোনও চালই চালতে না পারে।

এ কথা শুনে আনন্দে প্রায় লাফিয়ে উঠল পদ্মবীণা। সে অতি উৎসাহে খুব আট করে জড়িয়ে ধরল রত্নমালিকাকে। বলল - ও রত্ন! আজ তুমি আমাকে অত্যন্ত খুশী করে দিলে। আমি, আমার দেশ আজ তোমার কাছে ঋণী হয়ে গেলাম। এই বিপদ থেকে মুক্তির পথ আমার জানা ছিল না। অতি দুঃসময়ে তুমি আমাদের খুব সাহায্য করলে , সব কিছু একেবারে সহজ করে দিলে।

পদ্মবীণা-র বাহুবন্ধন থেকে রত্নমালিকা নিজেকে আলাদা করতে চাইল না। শুধু বলল - না গো। শুধু আমি একা এই কাজ করিনি। আমার ছোট বোন, ইন্দ্রাবতীও আমার সাথে ছিল।

পদ্ম - দেশমাতার সেই বীরাঙ্গনার আসল পরিচয়টা কী তুমি আমাকে খুলে বলবে? আমি যে মন থেকে তাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।

রত্ন - আরে! তার আসল পরিচয়টাই আমি তোমাকে দিলাম। কিন্তু তুমি যা জানো, সেটা ওর নকল পরিচয়। তবে ওর নকল পরিচয়টাই এখন ওর আসল পরিচয়। আমার ইন্দ্রাবতী হল তোমাদের শতরূপা।

অবাক, বিস্ময়ে পদ্মবীণা বলে উঠল - শতরূপা তোমার ছোট বোন? তোমার সেই ইন্দ্রাবতী যাকে তোমাদের রাজা বন্দী করে রেখেছিল?

রত্নমালিকা হেসে বলল - হ্যাঁ, শতরূপাই আমার ইন্দ্রাবতী। তবে তাকে আমাদের দুর্মতি অকচ রাজা কোনও দিনই বন্দী করতে পারেনি। আমাকে ব্যবহার করতে আমার কাছে একের পর এক শুধু মিথ্যা বলা হয়েছিল। সেদিন যখন একটা তীর আমার পীঠে এসে লাগল আর আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যাই, তখন সিপাহীরা আমাকে ধরে ফেললেও ইন্দ্রাবতীকে ধরতে পারেনি। তবে তারা ইন্দ্রাবতীর পিছা করতে থাকে। ক্ষুরধার বুদ্ধিসম্পন্না ইন্দ্রাবতী অতি দুঃসাহসে ভর করে পালাতে পালাতে তোমাদের রাজ্য সীমার মধ্যে প্রবেশ করে যায়। আমাদের সিপাহীরাও তার পিছু ধাওয়া করে করে তোমাদের রাজ্যের সীমার ভীতরে চলে আসে। সৌভাগ্য ক্রমে ইন্দ্রাবতী সুধামেল নামক কোন এক ভ্রামণিক রাজদেহরক্ষীর সামনে পড়ে যায়। ইন্দ্রাবতী অতি কাতর ভাবে দুই হাত জোড় করে সুধামেলের পায়ে লুটিয়ে পড়ে, তার কাছে আশ্রয় চায়, নিজের প্রাণ ভিক্ষা চায়। সুধামেল তার কথা রাখে। অত্যন্ত পরাক্রমের সাথে দশ-বার জন সিপাহিদের চোখের নিমেষে বধ করে ফেলে। এই দেখে বাকীরা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যায়। তখন সুধামেল ইন্দ্রাবতী-র কাছে সব কিছু জানতে চায়। সেদিন ইন্দ্রাবতী কিছুই লুকোয়নি সুধামেলের কাছে। অকপটে সব সত্যি বলে দিয়েছিল। সেই দয়াবান পুরুষটি ইন্দ্রাবতী-র নতুন নাম দেয় শতরূপা আর তাকে রাজধানীতে নিয়ে গিয়ে রাজপ্রাসাদে এক দাসীর কাজে নিযুক্ত করে। দাসীর কাজে নিযুক্ত থাকলেও শতরূপার আসল কাজ ছিল রাজপ্রাসাদে ষড়যন্ত্রকারীদের অনুসন্ধান করা।

একটু হাফ ছেড়ে রত্নমালিকা আবার বলতে লাগল - এত সব ঘটনা আমি কিছুই জানতাম না। ওরা বরাবরই আমাকে মিথ্যা বলে গিয়েছিল। আজো ভ্রমান্ধ থামতাম, কিছুই জানতাম না যদি না শতরূপার সাথে আমার দেখা হত! হা ঈশ্বর! কেন তুমি এত দেরীতে আমার ভ্রম ভঙ্গ করলে?

পদ্মবীণা উৎসুক হয়ে বলল - কিন্তু আমার মনে কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। যেমন, দু-দিন আগে শতরূপাকে কেন সিপাহীরা তাড়া করেছিল? শতরূপা কেন রাজপ্রাসাদে বিশ্বাসঘাতকদের বিশাল ষড়যন্ত্র-র কথাটি জানতে পারল না? কী করে তোমরা জানতে পারলে যে রাজশ্রেষ্ঠ-র পোষা পায়রাটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে? আর কী করেই তোমরা সে পায়রাটিকে মুক্ত করে দিলে? কেন তোমার নাভিকুণ্ডে এই রক্ত?
Next Part

Previous Parts: 1st Part    2nd Part    3rd Part    4th Part   

## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717
All Bengali Stories    22    23    24    25    26    27    (28)